your doctor

Mail: yourdoctor.hello@gmail.com

YOUR DOCTOR

Thursday, 13 January 2011

এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি


সংজ্ঞা : নিষিক্ত ডিম্বানু স্বাভাবিক অবস্থায় জরায়ুতে স্থাপিত হয়। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে নিষিক্ত ডিম্বানু জরায়ুর বাইরে স্থাপিত হতে পারে । এই ধরনের গর্ভাবস্থাকে এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি বলে ।
এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি এর স্থান :
০০ জরায়ুর বাইরে :
০ ডিম্বনালী- সবচেয়ে বেশী এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি হয় ( ৯৭% ) । বিশেষ করে এ্যাম্পুলা নামক অংশে (৬৪%)।
০ ডিম্বকোষ-০.৫%
০ পেটের ভিতরে-১%
০০ জরায়ুর ভিতরে ( ইউটেরাইন ) ১.৫%


পরিসংখ্যান :
প্রতি ৩০০ জনে ১জন থেকে ১৫০ জনে ১ জন গর্ভবতী মহিলার এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি হয় ।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে মাতৃমৃত্যুর অন্যতম উল্লেখযোগ্য কারণ এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি ।
কারণ ও ঝুঁকি :
০ পূর্ববর্তী পেলভিক প্রদাহ (PID)
০ ডিম্বনালীর লাইগেশন
০ জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থতা (Contraception failure )
০ পূর্ববর্তী এ্যকটোপিক
০ ডিম্বনালীর অপারেশন
০ বন্ধ্যাত্ব ( history of infertility )
০ কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি ( ART )
০ পূর্ববর্তী গর্ভপাত (previous induced abortion )
উপসর্গ :
০০ মাসিক বন্ধ ( amenorrhoea ) ৭৫%
তলপেটে ব্যথা-১০০%
রক্তপাত (Vaginal bleeding)-৭০%
এই তিন উপসর্গ ডিম্বনালীর এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি এর ক্লাসিক্যাল ট্রায়েড (Classical Triad)
০০ মাসিক বন্ধ- ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ । কোন কোন ক্ষেত্রে সামান্য রক্তপাত (Spotting) হতে পারে ।
০০ পেট ব্যথা- সব রোগীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । ব্যথা অত্যন্ত তীব্র ও অসহনীয় । ব্যথা প্রথমে তলপেটে পরে পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়ে ।
০০ রক্তপাত- রক্তপাত অল্প অল্প করে অনবরত হতে থাকে । রক্তের রং কালচে লাল হয়ে থাকে ।
০০ বমিবমি ভাব, হঠাৎ বেহুশ হয়ে যাওয়া (fainting) ১০%
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা :
০ এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি রোগীকে দেখে পরীক্ষার সময় অনেকটুকু নির্ণয় করা যায় ।
রোগী শান্ত, সজাগ থাকে কিন্তু ঘর্মাক্ত (Perspiring) ও শূন্যদৃষ্টিতে চেয়ে থাকে ।
০ রক্তশূন্যতা (Pallor) খুব বেশী থাকে যা ভিতরে রক্তপাতের (internal haemorrhage) উপর নির্ভর করে ।
০ অজ্ঞান এর উপসর্গ অর্থাৎ দ্রুত শিরা স্পন্দন, নিম্ন রক্তচাপ ও হাতপা ঠান্ডা হওয়া ।
০ পেট পরীক্ষা (Per abdominal) পেটে প্রচন্ড ব্যথা ও পেট শক্ত হয়ে যাওয়া । নিম্ন পেটে এই উপসর্গ দেখা যায় ।
পেলভিক পরীক্ষা :
০ ফরনিক্স (Fornix) এ তীব্র ব্যথা
০ জরায়ু পানিতে ভাসছে মনে হয় ।
ল্যাব পরীক্ষা :
০ বিটা-এইচ সি জি (βhcg)
০ রক্তের পরীক্ষা-সি বি সি (TC, DC, Hb%, ESR, Platelet)
০ রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা
০ অfল্ট্রাসনোগ্রাফী
-ট্রান্সভেজাইনাল সনোগ্রাফী (TVS)
-ট্রান্সএ্যবডোমিনাল (Transabdominal)
০ প্রস্রাব পরীক্ষা

চিকিৎসা
০০ এক্সপেকট্যান্ট ম্যানেজমেন্ট
০ কমব্যথা কম রক্তপাত
০ বিটা এইচ সি জি ১০০০ আই ইউ এর চেয়ে কম এবং ক্রমশ: কমছে
০ ডিম্বনালীর ফেটে যাওয়ার উপসর্গ নাই
০০ মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট :
০ মিথোট্রিক্সেট দিয়ে করা হয়
০ স্বাভাবিক ভাইটালসাইন (Vital Sign) স্বাভাবিক লিভার পরীক্ষা, স্বাভাবিক রক্তের পরীক্ষা হলে
০ এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি না ফেটে গেলে
০ বিটা এইচ সি জি ৫০০০ আই ইউ এর নিচে হলে
০ এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি এর সাইজ ৪ সে: মি: এর চেয়ে কম
০০ সার্জিক্যাল ম্যানেজমেন্ট এর পূর্বশর্ত :
০ এক্সপেকট্যান্ট ম্যানেজমেন্ট, মেডিকেল চিকিৎসা বিফল হলে
০ পেরিটোনিয়ামে রক্তপাত হলে
০ রোগ নির্ণয়ে সন্দেহ হলে
০ অনেকদিনের এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি
০ ভাইটালসাইন স্বাভাবিক না থাকলে
সার্জিক্যাল পদ্ধতি :
০ লেপারোসকপি (Laparoscopy): একে (key-hole) সার্জারি বলা হয় । প্রাথমিক ভাবে এই সার্জারি উত্তম ।
০ ল্যাপারোটমি (Laparotomy)
০ পেট কেটে অপারেশন করা হয়
ভবিষ্যৎ গর্ভধারণ ক্ষমতা :
এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সিতে ভবিষ্যৎ গর্ভধারন ক্ষমতা ৭৭%
পরবর্তী এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি হওয়ার ঝুঁকি :
০ ১ম এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি-এর পর-৫-২০%
০ ২য় এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি-এর পর-৩২%
চিকিৎসা পরবর্তী ফলো আপ (follow up)
০ ধূমপান নিষেধ
০ ফলিক এসিড খাওয়া
০ পরবর্তী গর্ভের সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া
যেহেতু এ্যকটোপিক প্রেগনেন্সি গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে উল্লেখযোগ্য মাতৃমৃত্যুর কারণ সেহেতু দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং এর চিকিৎসা করা জরূরী ।

No comments: